ধীরগতির কম্পিউটারকে করুন সুপারফাস্ট! ৫টি অব্যর্থ টিপস

ধীরগতির কম্পিউটারকে করুন সুপারফাস্ট! ৫টি অব্যর্থ টিপস


আপনার কম্পিউটার কি ধীর গতিতে চলছে? হতাশ হবেন না! এই ব্লগ পোস্টে কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর ৫টি সহজ উপায় ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। এই টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার পুরনো কম্পিউটারটিকেও দ্রুতগতির করে তুলতে পারবেন। এখনই পড়ুন এবং আপনার কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করুন!

কম্পিউটার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শিক্ষা, কাজ, বিনোদনসব ক্ষেত্রেই আমরা কোনো না কোনোভাবে কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল। তবে, সময়ের সাথে সাথে অনেক কম্পিউটারের গতি কমে যেতে শুরু করে। একটি ধীরগতির কম্পিউটার ব্যবহার করা যেমন বিরক্তিকর, তেমনই কর্মক্ষেত্রেও অনেক সময় নষ্ট হয়।

অনেকেই মনে করেন কম্পিউটারের গতি কমে গেলে নতুন একটি কম্পিউটার কেনা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তবে, সত্যি বলতে কি, আপনার পুরনো কম্পিউটারটির গতিও কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করে বাড়ানো সম্ভব। এই ব্লগ পোস্টে আমরা কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর ৫টি অত্যন্ত সহজ এবং কার্যকরী উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। এই টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি খুব সহজেই আপনার কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবেন এবং একটি মসৃণ কম্পিউটিং অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন।

তাহলে আর দেরি না করে, আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই ৫টি সহজ উপায়:

. অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম আনইনস্টল করা:

আমাদের কম্পিউটারে এমন অনেক প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকে যা আমরা হয়তো খুব কম ব্যবহার করি, অথবা একেবারেই ব্যবহার করি না। এই অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামগুলো কম্পিউটারের মূল্যবান ডিস্ক স্পেস দখল করে রাখে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকার কারণে সিস্টেমের রিসোর্স ব্যবহার করে। এর ফলে কম্পিউটারের গতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

কিভাবে অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম আনইনস্টল করবেন:

অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম আনইনস্টল করার জন্য দুটি প্রধান পদ্ধতি রয়েছে: কন্ট্রোল প্যানেল ব্যবহার করে এবং সেটিংস অ্যাপ ব্যবহার করে। আপনার অপারেটিং সিস্টেমের উপর নির্ভর করে আপনি যেকোনো একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।

কন্ট্রোল প্যানেল ব্যবহার করে (উইন্ডোজের পুরনো সংস্করণ):

  • প্রথমে "Start" মেনুতে ক্লিক করুন।
  • সার্চ বারে "Control Panel" লিখে এন্টার চাপুন।
  • কন্ট্রোল প্যানেল উইন্ডোটি খুললে "Programs" অথবা "Programs and Features" অপশনটিতে ক্লিক করুন।
  • এখানে আপনার কম্পিউটারে ইনস্টল করা সমস্ত প্রোগ্রামের একটি তালিকা দেখতে পাবেন।
  • যে প্রোগ্রামটি আপনি আনইনস্টল করতে চান, সেটির উপর রাইট-ক্লিক করুন এবং "Uninstall" অপশনটি নির্বাচন করুন।
  • আনইনস্টল করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্ক্রিনে প্রদর্শিত নির্দেশাবলী অনুসরণ করে প্রোগ্রামটি আনইনস্টল করুন।

সেটিংস অ্যাপ ব্যবহার করে (উইন্ডোজের নতুন সংস্করণ - উইন্ডোজ ১০ এবং ১১):

  • "Start" মেনুতে ক্লিক করুন অথবা উইন্ডোজ কি + I একসাথে চেপে সেটিংস অ্যাপটি খুলুন।
  • "Apps" অপশনটিতে ক্লিক করুন।
  • "Apps & features" অথবা শুধু "Installed apps" অপশনটি নির্বাচন করুন।
  • এখানে আপনার কম্পিউটারে ইনস্টল করা সমস্ত অ্যাপ এবং প্রোগ্রামের একটি তালিকা দেখতে পাবেন।
  • যে প্রোগ্রামটি আপনি আনইনস্টল করতে চান, সেটির নামের উপর ক্লিক করুন।
  • "Uninstall" বোতামটি দেখতে পাবেন। সেটিতে ক্লিক করুন এবং আনইনস্টল করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য স্ক্রিনে প্রদর্শিত নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।

কোন প্রোগ্রামগুলো আনইনস্টল করা উচিত:

  • যে প্রোগ্রামগুলো আপনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করেননি।
  • যে প্রোগ্রামগুলো আপনি চেনেন না অথবা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে।
  • ট্রায়াল বা ডেমো সংস্করণ যা আপনি আর ব্যবহার করছেন না।
  • একাধিক একই ধরনের প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকলে (যেমন দুটি আলাদা পিডিএফ রিডার)

অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম আনইনস্টল করার মাধ্যমে আপনি আপনার কম্পিউটারের ডিস্ক স্পেস খালি করতে পারবেন এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে অপ্রয়োজনীয় প্রসেসরের ব্যবহার কমাতে পারবেন, যা সরাসরি আপনার কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

. স্টার্টআপ প্রোগ্রামগুলো নিয়ন্ত্রণ করা:

যখন আপনি আপনার কম্পিউটার চালু করেন, তখন অনেক প্রোগ্রাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে শুরু হয় এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে। এই স্টার্টআপ প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে কিছু প্রয়োজনীয় হলেও, অনেক প্রোগ্রাম অপ্রয়োজনীয়ভাবে সিস্টেমের রিসোর্স ব্যবহার করে এবং কম্পিউটার চালু হতে বেশি সময় নেয়। এছাড়াও, এই প্রোগ্রামগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চলার কারণে কম্পিউটারের সামগ্রিক গতিও কমে যায়।

কিভাবে স্টার্টআপ প্রোগ্রামগুলো নিয়ন্ত্রণ করবেন:

স্টার্টআপ প্রোগ্রামগুলো নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল টাস্ক ম্যানেজার ব্যবহার করা।

  • কিবোর্ডের Ctrl + Shift + Esc বোতাম তিনটি একসাথে চেপে টাস্ক ম্যানেজার খুলুন।
  • টাস্ক ম্যানেজার উইন্ডোতে "Startup" ট্যাবটিতে ক্লিক করুন (উইন্ডোজ "Startup" নামে আলাদা ট্যাব থাকতে পারে, উইন্ডোজ ১০ এবং ১১ তে এটি "Startup apps" নামে থাকতে পারে)
  • এখানে আপনি আপনার কম্পিউটারের সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শুরু হওয়া প্রোগ্রামগুলোর একটি তালিকা দেখতে পাবেন। প্রতিটি প্রোগ্রামের পাশে তার "Startup impact" (কম, মাঝারি, উচ্চ) উল্লেখ করা থাকে, যা নির্দেশ করে যে প্রোগ্রামটি আপনার সিস্টেমের শুরুতে কতটা প্রভাব ফেলে।
  • যে প্রোগ্রামটি আপনি স্টার্টআপে নিষ্ক্রিয় করতে চান, সেটির উপর রাইট-ক্লিক করুন এবং "Disable" অপশনটি নির্বাচন করুন।

কোন স্টার্টআপ প্রোগ্রামগুলো নিষ্ক্রিয় করা উচিত:

  • যে প্রোগ্রামগুলো আপনার তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজন হয় না (যেমন স্কাইপ, ড্রপবক্স, ওয়ানড্রাইভ ইত্যাদি) আপনি যখন প্রয়োজন হবে তখন ম্যানুয়ালি এই প্রোগ্রামগুলো খুলতে পারেন।
  • তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশন যা আপনি খুব কম ব্যবহার করেন।
  • যদি কোনো সন্দেহজনক প্রোগ্রাম স্টার্টআপে থাকে, তবে সেটি নিষ্ক্রিয় করা উচিত।

স্টার্টআপ প্রোগ্রামগুলো নিষ্ক্রিয় করার মাধ্যমে আপনার কম্পিউটার দ্রুত চালু হবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে অপ্রয়োজনীয় রিসোর্স ব্যবহার কমে যাওয়ায় কম্পিউটারের সামগ্রিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

. ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টেশন করা:

ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টেশন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনার হার্ড ডিস্ক ড্রাইভে (HDD) ফাইলগুলো পুনরায় সাজানো হয়। যখন আপনি আপনার কম্পিউটারে ফাইল তৈরি, মুছে ফেলা এবং পরিবর্তন করেন, তখন ডেটাগুলো ডিস্কের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে পারে। এটিকে ফ্র্যাগমেন্টেশন বলা হয়। ফ্র্যাগমেন্টেড ডেটা অ্যাক্সেস করতে হার্ড ড্রাইভের বেশি সময় লাগে, যার ফলে কম্পিউটারের গতি কমে যায়।

কিভাবে ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টেশন করবেন:

উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে একটি অন্তর্নির্মিত ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টেশন টুল রয়েছে যা ব্যবহার করে আপনি আপনার হার্ড ড্রাইভকে ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে পারেন।

  • "Start" মেনুতে ক্লিক করুন।
  • সার্চ বারে "Defragment and Optimize Drives" লিখে এন্টার চাপুন।
  • "Defragment and Optimize Drives" উইন্ডোটি খুলবে। এখানে আপনার কম্পিউটারের সমস্ত ড্রাইভের তালিকা দেখতে পাবেন।
  • যে ড্রাইভটি আপনি ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে চান (সাধারণত C: ড্রাইভ), সেটি নির্বাচন করুন।
  • "Optimize" বোতামে ক্লিক করুন। উইন্ডোজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রাইভটিকে ডিফ্র্যাগমেন্ট করা শুরু করবে। এই প্রক্রিয়ায় কিছু সময় লাগতে পারে, যা আপনার ড্রাইভের আকার এবং ফ্র্যাগমেন্টেশনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

  • ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টেশন শুধুমাত্র হার্ড ডিস্ক ড্রাইভের (HDD) জন্য প্রযোজ্য। যদি আপনার কম্পিউটারে সলিড স্টেট ড্রাইভ (SSD) থাকে, তবে ডিফ্র্যাগমেন্টেশন করার প্রয়োজন নেই। বরং, এসএসডি- জন্য উইন্ডোজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে "TRIM" নামক একটি প্রক্রিয়া চালায় যা এর কার্যকারিতা বজায় রাখে। এসএসডি ডিফ্র্যাগমেন্ট করলে এর জীবনকাল কমে যেতে পারে।
  • নিয়মিতভাবে (যেমন মাসে একবার) আপনার হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ ডিফ্র্যাগমেন্ট করা কম্পিউটারের গতি বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।

ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টেশনের মাধ্যমে আপনার হার্ড ড্রাইভের ডেটাগুলো গুছিয়ে রাখা হয়, যার ফলে ফাইল অ্যাক্সেস করার সময় কমে আসে এবং কম্পিউটারের সামগ্রিক গতি বৃদ্ধি পায়।

. অস্থায়ী ফাইল এবং ক্যাশে পরিষ্কার করা:

যখন আপনি আপনার কম্পিউটার ব্যবহার করেন, তখন বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন এবং অপারেটিং সিস্টেম অস্থায়ী ফাইল (Temporary Files) এবং ক্যাশে (Cache) তৈরি করে। এই ফাইলগুলো দ্রুত ডেটা অ্যাক্সেস করার জন্য তৈরি করা হয়, তবে সময়ের সাথে সাথে এই ফাইলগুলোর সংখ্যা অনেক বেড়ে যেতে পারে এবং মূল্যবান ডিস্ক স্পেস দখল করতে পারে। এর ফলে কম্পিউটারের গতি কমে যায় এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলো সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে।

কিভাবে অস্থায়ী ফাইল এবং ক্যাশে পরিষ্কার করবেন:

অস্থায়ী ফাইল এবং ক্যাশে পরিষ্কার করার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে:

ডিস্ক ক্লিনআপ ব্যবহার করে (উইন্ডোজ):

  • "Start" মেনুতে ক্লিক করুন।
  • সার্চ বারে "Disk Cleanup" লিখে এন্টার চাপুন।
  • "Disk Cleanup" ডায়ালগ বক্স খুলবে। এখানে আপনি কোন ড্রাইভটি পরিষ্কার করতে চান তা নির্বাচন করতে বলা হবে (সাধারণত C: ড্রাইভ) ড্রাইভ নির্বাচন করে "OK" ক্লিক করুন।
  • ডিস্ক ক্লিনআপ আপনার ড্রাইভ স্ক্যান করবে এবং পরিষ্কার করার জন্য ফাইলগুলোর একটি তালিকা দেখাবে (যেমন অস্থায়ী ইন্টারনেট ফাইল, রিসাইকেল বিন, থাম্বনেইলস ইত্যাদি)
  • যে ফাইলগুলো আপনি মুছতে চান সেগুলো নির্বাচন করুন এবং "OK" ক্লিক করুন।
  • একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা আসবে, "Delete Files" ক্লিক করে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করুন।

রান কমান্ড ব্যবহার করে অস্থায়ী ফাইল পরিষ্কার করা:

  • কিবোর্ডের উইন্ডোজ কি + R একসাথে চেপে রান ডায়ালগ বক্স খুলুন।
  • "%temp%" লিখে এন্টার চাপুন। একটি ফোল্ডার খুলবে যেখানে আপনার কম্পিউটারের অস্থায়ী ফাইলগুলো জমা থাকে।
  • এই ফোল্ডারের সমস্ত ফাইল এবং ফোল্ডার নির্বাচন করুন (Ctrl + A) এবং Shift + Delete চেপে স্থায়ীভাবে মুছে ফেলুন। কিছু ফাইল মুছতে আপনার প্রশাসনিক অনুমতির প্রয়োজন হতে পারে, সেক্ষেত্রে "Skip" করে যান।
  • পুনরায় রান ডায়ালগ বক্স খুলুন এবং "temp" (শতাংশ চিহ্ন ছাড়া) লিখে এন্টার চাপুন। একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এই ফোল্ডারের ফাইলগুলোও মুছে ফেলুন।
  • আবার রান ডায়ালগ বক্স খুলুন এবং "prefetch" লিখে এন্টার চাপুন। এই ফোল্ডারের ফাইলগুলোও একই ভাবে মুছে ফেলুন।

ব্রাউজারের ক্যাশে এবং কুকিজ পরিষ্কার করা:

আপনার ব্যবহৃত ওয়েব ব্রাউজারও ক্যাশে এবং কুকিজ জমা করে রাখে। এগুলো পরিষ্কার করার জন্য ব্রাউজারের সেটিংস- যান এবং "Clear browsing data", "Clear cache", "Clear cookies and other site data" অপশনগুলো খুঁজে নিয়ে পরিষ্কার করুন। প্রতিটি ব্রাউজারের জন্য এই প্রক্রিয়াটি সামান্য ভিন্ন হতে পারে।

নিয়মিতভাবে অস্থায়ী ফাইল এবং ক্যাশে পরিষ্কার করার মাধ্যমে আপনি আপনার কম্পিউটারের ডিস্ক স্পেস পুনরুদ্ধার করতে পারবেন এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর কার্যকারিতা উন্নত করতে পারবেন, যা শেষ পর্যন্ত আপনার কম্পিউটারের গতি বাড়াতে সাহায্য করবে।

. অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার ব্যবহার করা:

ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার আপনার কম্পিউটারের গতি কমার অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে। ক্ষতিকারক প্রোগ্রামগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে, সিস্টেমের রিসোর্স ব্যবহার করে এবং অনেক সময় ডেটা চুরি করার চেষ্টা করে। এর ফলে আপনার কম্পিউটার ধীরগতির হয়ে যেতে পারে এবং অপ্রত্যাশিত আচরণ করতে পারে।

কিভাবে অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার ব্যবহার করবেন:

  • আপনার কম্পিউটারে একটি নির্ভরযোগ্য অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার প্রোগ্রাম ইনস্টল করুন। বাজারে অনেক ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার পাওয়া যায় (যেমন Norton, McAfee, Kaspersky, Bitdefender) উইন্ডোজের সাথে ডিফল্টভাবে "Windows Security" (আগে "Windows Defender" নামে পরিচিত ছিল) ইনস্টল করা থাকে, যা একটি ভালো সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।
  • আপনার অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার প্রোগ্রামটিকে সর্বদা আপ-টু-ডেট রাখুন। নিয়মিতভাবে সফটওয়্যারের ডেফিনিশন আপডেট করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে এটি নতুন এবং সর্বশেষ হুমকির বিরুদ্ধে আপনার কম্পিউটারকে রক্ষা করতে পারে।
  • নিয়মিতভাবে আপনার পুরো কম্পিউটার স্ক্যান করুন। অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারে "Full Scan" অপশনটি ব্যবহার করে আপনার সিস্টেমের প্রতিটি ফাইল এবং ফোল্ডার ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। কোনো হুমকি শনাক্ত হলে সফটওয়্যারটি আপনাকে জানাবে এবং সেটি সরিয়ে ফেলার জন্য নির্দেশাবলী প্রদান করবে।
  • সন্দেহজনক ওয়েবসাইট এবং ইমেইল থেকে সাবধান থাকুন। অজানা লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করা বা সন্দেহজনক ফাইল ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকুন।
  • একটি শক্তিশালী এবং অনন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং আপনার অপারেটিং সিস্টেম এবং অন্যান্য সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করুন, কারণ অনেক সময় নিরাপত্তা দুর্বলতার মাধ্যমে ম্যালওয়্যার আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারে।

একটি ভালো অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি আপনার কম্পিউটারকে ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম থেকে রক্ষা করতে পারবেন এবং এর স্বাভাবিক গতি বজায় রাখতে পারবেন।

উপসংহার:

কম্পিউটারের গতি কমে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। উপরে উল্লেখিত ৫টি সহজ উপায় অবলম্বন করে আপনি খুব সহজেই আপনার পুরনো কম্পিউটারটির গতি বাড়াতে পারেন এবং একটি উন্নত কম্পিউটিং অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন। মনে রাখবেন, নিয়মিতভাবে আপনার কম্পিউটারের রক্ষণাবেক্ষণ করা (যেমন অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম আনইনস্টল করা, স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিয়ন্ত্রণ করা, অস্থায়ী ফাইল পরিষ্কার করা এবং অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা) এর কার্যকারিতা দীর্ঘকাল ধরে বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

এ সম্পর্কিত আরো লেখা পড়ুন-------------------

 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post