ঘরে বসে ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের স্পিড বাড়ানোর সহজ পদ্ধতি: একটি স্টেপ-বাই-স্টেপ গাইড

ঘরে বসে ওয়াইফাইনেটওয়ার্কের স্পিড বাড়ানোর সহজ পদ্ধতি: একটি স্টেপ-বাই-স্টেপ গাইড

আজকাল ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পড়াশোনা, কাজ, বিনোদন কিংবা যোগাযোগ – সবকিছুর জন্যই চাই নিরবচ্ছিন্ন এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট। আর ঘরে বসে ইন্টারনেটের মূল মাধ্যম হলো ওয়াইফাই। কিন্তু অনেক সময়ই আমরা অভিযোগ করি যে আমাদের ওয়াইফাই স্পিড যথেষ্ট নয়, বা মাঝেমধ্যেই গতি কমে যায়। এর কারণ কি শুধু ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সংযোগের গতি কম হওয়া? নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে যা আমরা নিজেরাই সমাধান করতে পারি?

আসলে, ওয়াইফাই স্পিড অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। আপনার রাউটারের অবস্থান, সেটিং, আশেপাশের পরিবেশ এবং আপনার ব্যবহৃত ডিভাইস – এ সবকিছুই ওয়াইফাই স্পিডকে প্রভাবিত করে। সুসংবাদ হলো, কিছু সহজ কৌশল অবলম্বন করে আপনি খুব সহজেই আপনার ঘরের ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের স্পিড উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারেন।

এই নির্দেশিকায় আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করবো কিভাবে আপনি ঘরে বসেই আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ককে অপটিমাইজ করে এর স্পিড বাড়াতে পারেন। চলুন শুরু করা যাক।

প্রথম ধাপ: সমস্যাশনাক্তকরণ – আসল সমস্যাটা কোথায়?

ওয়াইফাই স্পিড কম হওয়ার অভিযোগ করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে সমস্যাটা ঠিক কোথায়। সমস্যা কি আপনার ইন্টারনেট কানেকশনের মূল গতিতে, নাকি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের মধ্যে?

1.      ইন্টারনেট স্পিড টেস্ট করুন: আপনার ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান (ISP) আপনাকে যে গতির ইন্টারনেট দেওয়ার কথা বলেছে, আপনি আসলে সেই গতি পাচ্ছেন কিনা, তা পরীক্ষা করুন।

o    একটি স্পিড টেস্ট ওয়েবসাইট যেমন Speedtest.net বা Fast.com -এ যান।

o    আপনার রাউটারের কাছাকাছি একটি ডিভাইসে (কম্পিউটার বা স্মার্টফোন) ওয়াইফাই অন করে স্পিড টেস্ট চালান।

o    এরপর সম্ভব হলে ইথারনেট ক্যাবল দিয়ে সরাসরি রাউটারের সাথে কম্পিউটার কানেক্ট করে স্পিড টেস্ট চালান।

o    যদি ইথারনেট কানেকশনে ভালো স্পিড পান, কিন্তু ওয়াইফাইতে কম পান, তবে সমস্যাটি সম্ভবত আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে।

o    যদি ইথারনেট এবং ওয়াইফাই দুটোতেই স্পিড কম পান, তাহলে সমস্যাটি আপনার আইএসপি-র সংযোগে হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার আইএসপি-র সাথে যোগাযোগ করুন।

দ্বিতীয় ধাপ: রাউটারের সঠিক অবস্থান নির্বাচন

আপনার ওয়াইফাই সিগন্যালের শক্তি এবং কভারেজ অনেকাংশে রাউটারের অবস্থানের উপর নির্ভর করে। ভুল জায়গায় রাখলে স্পিড কমে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

1.      কেন্দ্রীয় স্থান নির্বাচন করুন: আপনার বাসার এমন একটি জায়গায় রাউটার রাখুন যেখান থেকে ওয়াইফাই সিগন্যাল আপনার বাসার সব দিকে সমানভাবে পৌঁছাতে পারে। বাসার একেবারে এক কোণে বা দেয়ালের পাশে রাখলে অন্য অংশে সিগন্যাল দুর্বল হয়ে যায়।

2.     উঁচু জায়গায় স্থাপন করুন: ওয়াইফাই সিগন্যাল নিচের দিকে ছড়াতে পছন্দ করে। তাই রাউটারকে মেঝেতে না রেখে একটু উঁচুতে, যেমন টেবিল বা শেলফে রাখুন।

3.     বাধা থেকে দূরে রাখুন: ভারী দেয়াল, কংক্রিট, ধাতু বা জলীয় বস্তু (যেমন বড় অ্যাকোয়ারিয়াম) ওয়াইফাই সিগন্যালকে বাধা দেয় এবং দুর্বল করে দেয়। তাই রাউটারকে এমন জিনিসগুলো থেকে দূরে রাখুন।

4.      ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে রাখুন: মাইক্রোওয়েভ ওভেন, কর্ডলেস ফোন, ব্লুটুথ ডিভাইস এবং এমনকি কিছু ফ্লুরোসেন্ট লাইট - এসব বস্তু ২.৪ গিগাহার্টজ (GHz) ফ্রিকোয়েন্সিতে ইন্টারফেয়ারেন্স তৈরি করতে পারে, যা ওয়াইফাই স্পিড কমিয়ে দেয়। রাউটারকে এই ধরনের ডিভাইস থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন।

5.     অ্যান্টেনার দিক ঠিক করুন: যদি আপনার রাউটারে এক্সটারনাল অ্যান্টেনা থাকে, তাহলে সেগুলোকে সোজাসুজি উপরের দিকে না রেখে একটিকে উল্লম্বভাবে (vertical) এবং অন্যটিকে অনুভূমিকভাবে (horizontal) রাখুন। এটি সিগন্যালকে বিভিন্ন দিকে ছড়াতে সাহায্য করে।

তৃতীয় ধাপ: রাউটারের সেটিংস অপটিমাইজ করা

রাউটারের কিছু অভ্যন্তরীণ সেটিংস পরিবর্তন করেও ওয়াইফাই স্পিড এবং পারফরম্যান্স উন্নত করা যায়। রাউটারের অ্যাডমিন প্যানেলে লগইন করে এই পরিবর্তনগুলো করতে হয় (সাধারণত ওয়েব ব্রাউজারে 192.168.0.1 বা 192.168.1.1 লিখে এন্টার করলেই রাউটারের লগইন পেজ আসে)।

1.      ফার্মওয়্যার আপডেট করুন: রাউটারের ফার্মওয়্যার হলো এর অপারেটিং সিস্টেম। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত ফার্মওয়্যার আপডেট প্রকাশ করে পারফরম্যান্স উন্নত করতে, বাগ ফিক্স করতে এবং নতুন ফিচার যোগ করতে। রাউটারের অ্যাডমিন প্যানেলে গিয়ে ফার্মওয়্যার আপডেটের অপশন খুঁজুন এবং এটি আপডেট আছে কিনা দেখুন। প্রয়োজনে আপডেট করুন।

2.     সঠিক ওয়াইফাই চ্যানেল নির্বাচন করুন: আপনার রাউটার বিভিন্ন চ্যানেলে সিগন্যাল পাঠায়। আপনার আশেপাশে অন্যান্য ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক থাকলে একই চ্যানেলে কাজ করার সময় তারা একে অপরের সিগন্যালে ইন্টারফেয়ারেন্স তৈরি করে, যা স্পিড কমিয়ে দেয়।

o    বেশিরভাগ রাউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে চ্যানেল নির্বাচন করে, কিন্তু মাঝে মাঝে এটি সেরা চ্যানেলটি বেছে নিতে পারে না।

o    আপনি আপনার স্মার্টফোনে কিছু অ্যাপ (যেমন Wi-Fi Analyzer for Android, বা Windows-এ InSSIDer) ব্যবহার করে আপনার এলাকার সবচেয়ে কম ব্যস্ত চ্যানেল খুঁজে বের করতে পারেন।

o    এরপর রাউটারের অ্যাডমিন প্যানেলে ওয়াইফাই সেটিংস-এ গিয়ে ম্যানুয়ালি সেই চ্যানেলটি নির্বাচন করুন।

o    2.4 GHz ব্যান্ডে সাধারণত চ্যানেল 1, 6 এবং 11 সবচেয়ে কম ওভারল্যাপ করে। 5 GHz ব্যান্ডে চ্যানেলের সংখ্যা বেশি এবং ইন্টারফেয়ারেন্স কম হয়।

3.     সঠিক ওয়াইফাই ব্যান্ড (2.4 GHz vs. 5 GHz) ব্যবহার করুন: আধুনিক ডুয়েল-ব্যান্ড বা ট্রাই-ব্যান্ড রাউটার 2.4 GHz এবং 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে।

o    2.4 GHz ব্যান্ড: এর পাল্লা বা কভারেজ বেশি, এটি দেয়াল বা অন্যান্য বাধা ভেদ করতে পারে ভালো। কিন্তু এর স্পিড তুলনামূলকভাবে কম এবং এটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন বা ব্লুটুথের মতো অন্যান্য ডিভাইসের সাথে ইন্টারফেয়ারেন্সের শিকার হয় বেশি।

o    5 GHz ব্যান্ড: এর স্পিড অনেক বেশি এবং ইন্টারফেয়ারেন্স কম হয়। কিন্তু এর পাল্লা কম এবং এটি বাধা ভেদ করতে অতটা কার্যকর নয়।

o    স্পিড-সংবেদনশীল ডিভাইস যেমন স্মার্ট টিভি (স্ট্রিমিং), গেমিং কনসোল, বা উচ্চ-গতির ডাউনলোডের জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটারকে 5 GHz ব্যান্ডে কানেক্ট করুন।

o    সাধারণ ব্যবহারের ডিভাইস যেমন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট যা ঘরের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে 2.4 GHz ব্যান্ডে কানেক্ট করতে পারেন।

o    কিছু রাউটারে "Band Steering" ফিচার থাকে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিভাইসকে সেরা ব্যান্ডে কানেক্ট করে দেয়। এই ফিচারটি অন করতে পারেন।

4.      ওয়াইফাই সিকিউরিটি উন্নত করুন: আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক যদি অরক্ষিত থাকে বা দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার প্রতিবেশীরা বা অন্য কেউ আপনার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারে। এর ফলে আপনার স্পিড কমে যাবে।

o    সর্বদা WPA2 বা WPA3 সিকিউরিটি প্রোটোকল ব্যবহার করুন (WEP অনেক পুরনো এবং অনিরাপদ)।

o    একটি শক্তিশালী এবং জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন যা সহজে অনুমান করা যায় না।

o    যদি আপনার রাউটারে গেস্ট নেটওয়ার্ক সুবিধা থাকে, তবে অতিথিদের জন্য সেটি ব্যবহার করুন যাতে তারা আপনার মূল নেটওয়ার্কের ব্যান্ডউইথ বা রিসোর্স ব্যবহার করতে না পারে।

5.     Quality of Service (QoS) সেটিং ব্যবহার করুন: কিছু রাউটারে QoS ফিচার থাকে। এটি আপনাকে নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন বা ডিভাইসের জন্য ব্যান্ডউইথ অগ্রাধিকার সেট করতে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, আপনি ভিডিও স্ট্রিমিং বা অনলাইন গেমিংকে ডাউনলোড বা ফাইল শেয়ারিংয়ের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে পারেন, যাতে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো মসৃণভাবে চলে।

চতুর্থ ধাপ: সংযুক্ত ডিভাইসগুলো পরিচালনা করা

আপনার নেটওয়ার্কে যত বেশি ডিভাইস সংযুক্ত থাকবে এবং যত বেশি ডেটা ব্যবহার করবে, ওয়াইফাই স্পিড তত ভাগ হয়ে যাবে।

1.      ব্যবহৃত নয় এমন ডিভাইস ডিসকানেক্ট করুন: যেসব ডিভাইস বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে না, সেগুলোর ওয়াইফাই বন্ধ রাখুন বা নেটওয়ার্ক থেকে ডিসকানেক্ট করুন।

2.     ব্যান্ডউইথ-হগিং অ্যাপ্লিকেশন চিহ্নিত করুন: আপনার কোনো ডিভাইস কি ব্যাকগ্রাউন্ডে প্রচুর ডেটা ডাউনলোড বা আপলোড করছে? যেমন - অটোমেটিক আপডেট, ক্লাউড সিঙ্ক, টরেন্ট ইত্যাদি। এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশনগুলো বন্ধ করুন বা সীমিত করুন যখন আপনার বেশি স্পিডের প্রয়োজন।

পঞ্চম ধাপ: রাউটারের হার্ডওয়্যার পরীক্ষা করুন

আপনার রাউটারের মডেল এবং বয়সও স্পিডের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

1.      অ্যান্টেনার ব্যবহার: যদি আপনার রাউটারের এক্সটারনাল অ্যান্টেনা থাকে, তাহলে সেগুলোকে সঠিক দিকে (দ্বিতীয় ধাপে আলোচিত) ঘুরিয়ে দেখুন। কিছু রাউটারে অ্যান্টেনা বদলানো যায়, সেক্ষেত্রে উচ্চ-ক্ষমতার অ্যান্টেনা লাগিয়েও কভারেজ এবং স্পিড বাড়ানো যেতে পারে।

2.     রাউটারের বয়স এবং প্রযুক্তি: আপনার রাউটারটি কি খুব পুরনো? পুরানো 802.11g বা 802.11n স্ট্যান্ডার্ডের রাউটারগুলো আধুনিক 802.11ac (Wi-Fi 5) বা 802.11ax (Wi-Fi 6) স্ট্যান্ডার্ডের রাউটারের চেয়ে অনেক ধীরগতির হয়। যদি আপনার ইন্টারনেট স্পিড 100 Mbps বা তার বেশি হয় এবং আপনার রাউটারটি অনেক পুরনো হয়, তাহলে সম্ভবত আপনার রাউটারটিই স্পিডের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটি আধুনিক রাউটার আপগ্রেড করার কথা ভাবুন।

ষষ্ঠ ধাপ: ওয়াইফাই কভারেজ বাড়ানো (যদি প্রয়োজন হয়)

আপনার বাসা যদি বড় হয় বা রাউটার থেকে দূরে কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় সিগন্যাল দুর্বল থাকে (ডেড জোন), তাহলে স্পিড বাড়ানোর জন্য ওয়াইফাই কভারেজ বাড়ানো প্রয়োজন হতে পারে।

1.      ওয়াইফাই এক্সটেন্ডার বা রিপিটার: এগুলো বিদ্যমান ওয়াইফাই সিগন্যালকে ধরে এটিকে রি-ব্রডকাস্ট করে কভারেজ বাড়ায়। এটি একটি সহজ সমাধান হলেও, অনেক সময় রিপিটার সিগন্যালকে দুর্বল করে দেয় বা স্পিড অর্ধেক করে দেয়।

2.     মেশ ওয়াইফাই সিস্টেম: বড় বাসা বা মাল্টি-স্টোরি বাড়ির জন্য এটি একটি চমৎকার সমাধান। একাধিক নোড বা স্যাটেলাইট ব্যবহার করে এটি পুরো বাসায় একটি শক্তিশালী এবং নির্বিঘ্ন ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এর দাম একটু বেশি হলেও পারফরম্যান্স খুব ভালো হয়।

3.     পাওয়ারলাইন অ্যাডাপ্টার: এটি আপনার বাসার ইলেক্ট্রিক ওয়্যারিং ব্যবহার করে ইন্টারনেট সিগন্যাল এক রুম থেকে অন্য রুমে পৌঁছে দেয়। যেখানে ওয়াইফাই পৌঁছায় না, সেখানে একটি পাওয়ারলাইন অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করে ইথারনেট পোর্ট তৈরি করা যায়। তবে ইলেক্ট্রিক ওয়্যারিংয়ের কোয়ালিটির উপর এর পারফরম্যান্স নির্ভর করে।

4.      অ্যাক্সেস পয়েন্ট (Access Point): ইথারনেট ক্যাবল ব্যবহার করে মূল রাউটারের সাথে কানেক্ট করে অ্যাক্সেস পয়েন্ট বসানো যায়, যা ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় নতুন ওয়াইফাই সিগন্যাল তৈরি করে। এটি রিপিটারের চেয়ে ভালো পারফর্ম করে।

সপ্তম ধাপ: রাউটার রিসেট বা রিস্টার্ট করুন

অনেক সময় ইলেকট্রনিক ডিভাইস একটানা চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে যায় বা ছোটখাটো সমস্যায় আটকে যায়। আপনার রাউটারও এর ব্যতিক্রম নয়।

  • মাসে অন্তত একবার আপনার রাউটারটি রিস্টার্ট করুন। রাউটারের পাওয়ার অ্যাডাপ্টার খুলে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করে আবার লাগান। এতে রাউটারের মেমোরি পরিষ্কার হয় এবং অনেক সাধারণ সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।
  • যদি সবকিছু চেষ্টা করার পরেও সমস্যা সমাধান না হয়, তাহলে রাউটারটিকে ফ্যাক্টরি রিসেট করার কথা ভাবতে পারেন (সাধারণত রাউটারের পেছনে একটি ছোট রিসেট বাটন থাকে, যা পিন দিয়ে ১০-১৫ সেকেন্ড চেপে ধরে রাখলে ফ্যাক্টরি সেটিংসে ফিরে যায়)। তবে মনে রাখবেন, এতে আপনার রাউটারের সব কাস্টম সেটিংস (ওয়াইফাই নাম, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি) মুছে যাবে এবং আপনাকে নতুন করে সেটআপ করতে হবে।

শেষ কথা

ঘরে ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর জন্য উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিগুলো খুবই কার্যকর। মনে রাখবেন, একটি পদ্ধতি সবসময় সবার জন্য সেরা নাও হতে পারে। আপনার বাসার গঠন প্রকৃতি, রাউটারের মডেল, ব্যবহৃত ডিভাইসের সংখ্যা এবং আশেপাশের পরিবেশের উপর নির্ভর করে আপনার জন্য কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর হবে। ধাপে ধাপে এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করুন এবং ফলাফল পরীক্ষা করুন।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাউটারের অবস্থান পরিবর্তন, চ্যানেল অপটিমাইজেশন এবং ওয়াইফাই সেটিংসে কিছু ছোট পরিবর্তনেই ওয়াইফাই স্পিডে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যায়। যদি আপনার রাউটারটি খুব পুরনো হয়ে থাকে এবং আপনার ইন্টারনেট সংযোগের গতির তুলনায় এর স্পিড কম হয়, তবে একটি নতুন এবং উন্নত রাউটার কেনা দীর্ঘমেয়াদে ভালো সমাধান দিতে পারে।

ধৈর্য ধরে এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে আশা করা যায় আপনি ঘরে বসেই আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের গতি এবং কার্যকারিতা বাড়াতে পারবেন এবং নিরবচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন।

 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post